সোনার বাংলার একটি সুশোভিত ফুল হয়ে সে প্রস্ফুটিত হোক
- গল্প লিখেছেনঃ নাজমুল ইসলাম ভূইয়া
- তারিখঃ 2017-03-07
- ভিজিটঃ 1272
সময়টা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ এর মাঝামাঝি। এক রাতে ১২ঃ০০ টায় ফেসবুকের অফিসিয়াল একাউন্টে মেসেজটা পেলাম। ড্রাইভারকে ঘুম থেকে জাগিয়ে গাড়ি বের করতে বললাম। রওনা হতে হতে একদল পুলিশ নির্ধারিত স্থানে যাবার জন্য থানায় ফোন দিলাম । তখন রাত ২.৩০ মিনিট। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া একটি মেয়ে বিয়ের আসরে বসে আছে। গায়ে হলুদ চলছে। পরিণত বয়সের অনেক অতিথি আনন্দে মেতে উঠেছে। হায়রে বিবেক! মেয়েটির বাবার আর্থিক অবস্থা ভাল না। তার লেখাপড়া চালিয়ে নেয়ার সামর্থ্য নেই গরীব বাবার। তাই মেয়ের দায়ভার অন্যের কাঁধে দেওয়ার এই আয়োজন। বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন, ১৯২৯ এর আলোকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বিয়েটা বন্ধ করলাম। মেয়েটার পড়াশোনা চালানোর দায়ভারটাও নিলাম নিজ থেকেই। এখনও আমাদের সমাজে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দায়মুক্ত হতে চায় বাবা মায়েরা। অথচ ঈশ্বরের পরেই বাবা মায়ের স্থান। সন্তানের ভাল মন্দ দেখার দায়িত্ব তাঁদের। কেন এমন হয়! মেয়েটি দেখতে খুব আদুরে। পড়ালেখাতেও ভাল, একটি স্বনামধন্য বিদ্যালয়ের ছাত্রী। অথচ বাবার আর্থিক অনটন এর বলি হতে যাচ্ছিল। তাকে অপরিণত বয়সের এই বিভিষীকাময় অধ্যায় থেকে বাঁচাতে পেরে নিজেকে কিছুটা দায়মুক্ত মনে হচ্ছিল, কিছুটা আনন্দিতও। আমি চাই সে বড় হোক। সোনার বাংলার একটি সুশোভিত ফুল হয়ে সে প্রস্ফুটিত হোক। খোঁজ নিয়ে জানলাম কিছুদিন আগে, লোকলজ্জা কাটিয়ে মেয়েটি স্কুলে যেতে শুরু করেছে ।