আর ইভটিজিং নয়
- গল্প লিখেছেনঃ হামিদুর রহমান
- তারিখঃ 2017-04-19
- ভিজিটঃ 2228
গত ১৯ এপ্রিল ২০১৫, পাবনা সদর উপজেলায় পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঁচজন ম্যাজিস্ট্রেট এর নেতৃত্বে একসাথে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয় । পাঁচজন ইভটিজারকে কারাদন্ড প্রদান করা হয়,বাকি একুশজন ইভটিজারকে মুছলেকা নিয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনারদের কাছে সোপর্দ করা হয়। পাবনা সদর উপজেলায় ইভটিজিং প্রকট আকার ধারণ করে । পত্রিকায় এ বিষয়ে বেশ কয়েকটি খবর ছাপানো হয় । জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ে অভিযোগ আসে কয়েকটি । অভিভাবকরা হতাশা প্রকাশ করে । ইভটিজারদের হাতে তারা জিম্মি । পাবনা জেলার জেলা প্রশাসক কাজী আশরাফ উদ্দীন এর নির্দেশনা অনুসারে একই সাথে একাধিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় । অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর নেতৃত্বে আমরা পাঁচজন ম্যাজিস্ট্রেট ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার, পাবনা সদর সার্কেল মিটিং করি । একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হয় । পরিকল্পনা হলো,বিকাল তিনটার মধ্যে আমরা এক একটা প্রতিষ্ঠানে চলে যাব । পুলিশ থাকবে সিভিল পোশাকপরা । কাছাকাছি স্থান থেকে পরিস্থিতি অবলোকন করব । ইভটিজারদের আটক করা গেলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও অভিভাবকদের খবর দেয়া হবে । পরিকল্পনা অনুসারে আমরা পৌঁছে গেলাম । বিকাল সাড়ে চারটার সময় স্কুল ও কলেজগুলো ছুটি হলো । প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি স্থান হতে চার-পাঁচ জনকে আটক করা হয় । পাঁচ ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোট সাতাশজনকে আটক করা হয় । আটকৃতদের বয়স ছিল ষোল থেকে ত্রিশ বছরের মধ্যে । পরিকল্পনা অনুসারে, আটকৃতদের অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কমিশনারকে তলব করা হয় । আটকৃতদের মধ্যে অপরাধের মাত্রা অনুসারে পাঁচজনকে ভিবিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করা হয় । বাকি একুশ জনকে মুছলেকা সম্পাদনের আদেশ দেয়া হয় । মুছলেকা সম্পাদন শেষে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কমিশনারের উপস্থিতে আটককৃতদের অভিভাবকের জিম্মায় দেয়া হয় । কারাদন্ডপ্রাপ্তদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয় । মূহুর্তেই পাবনা সদর উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ে মোবাইল কোর্টের বিষয়টি । স্বস্তি প্রকাশ করে অভিভাবক, শিক্ষার্থী । স্থানীয় জনগণের মাঝে ব্যাপক সাড়া তৈরি করে । পত্রিকায় ফলাও করে খবরটি প্রকাশিত হয় । পাবনা সদর উপজেলায় ইভটিজিং বন্ধে এটি একটি সফল মোবাইল কোর্ট ছিল ।