সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত

Client Logo
  • গল্প লিখেছেনঃ  অভিজিৎ বসাক
  • তারিখঃ 2017-04-18
  • ভিজিটঃ 1723
 
আমি তখন চট্টগ্রামের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।সময়টা ২০১৫ সালের মাঝামাঝি।চট্টগ্রামসহ সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার হঠাৎ করেই অনেকটা বেড়ে যায়।ঐ সময় এ ঘটনাগুলোর জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন চালকদের দায়ী করা হয়।এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম কর্তৃক ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে সমগ্র চট্টগ্রাম জেলায় অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।জেলা প্রশাসক মহোদয় ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য আমাকে নির্দেশ প্রদান করেন।আমি সপ্তাহে ২-৩ দিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে শুরু করি পুরো শহর জুড়ে। লাইসেন্সবিহীন চালকদের মোটরযান অধ্যাদেশ,১৯৮৩ এর ১৩৮ ধারা অনুযায়ী বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হয়। সপ্তাহে ২-৩ দিন করে শুরু করে প্রায় ২ মাস এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করেছিলাম আমি।এর মধ্যে কাজীর দেউরী ও টাইগার পাস মোড়ে অনেক বড় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। কাজীর দেউরী এলাকায় সারাদিন অভিযান চালিয়ে প্রায় ৪০ জন এর অধিক চালকদের সাবধান করে দিয়েছিলাম সচেতনভাবে গাড়ি চালানোর জন্য। এছাড়াও প্রায় ২০ জনকে লাইসেন্স না থাকার জন্য বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড অথবা জরিমানা করা হয়। টাইগার পাস মোড়ে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২০ জনকে লাইসেন্স না থাকার জন্য বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড বা  ৫০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করেছিলাম।৫০ জনের বেশি চালকদের বলা হয়েছিলো নিয়ম মেনে গাড়ি চালানোর জন্য। এছাড়াও মোটরসাইকেলে অতিরিক্ত আরোহী,লাইসেন্স না থাকা এবং হেলমেট পরিধান না করার জন্য জরিমানা ও সতর্ক  করা হয়েছিল। প্রায় ২ মাসের অভিযানে চট্টগ্রামের সড়কগুলোতে লাইসেন্সবিহীন চালকদের সংখ্যা অনেক কমে আসে। বিআরটিএ, চট্টগ্রাম-এ ড্রাইভিং লাইসেন্স নেয়ার জন্য অনেক আবেদন পড়তে থাকে। জনগণের মধ্যেও অনেক সচেতনতা সৃষ্টি হয় এ ব্যাপারে।চট্টগ্রামের বাসিন্দারা এই অভিযানের অনেক প্রশংসা করতে থাকে। স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোতে এই অভিযানগুলো নিয়ে অনেক সংবাদ ছাপা হয়েছিল।আর আমি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মানুষদের ঐ সচেতনতাটুকু সৃষ্টি করতে কাজ করতে পারায় এখনও নিজেকে ধন্য মনে করি। 

 প্রিন্ট