সোনালী আঁশে সবুজ অাবেশে


- গল্প লিখেছেনঃ ফাতেমা-তুজ-জোহরা
- তারিখঃ 2017-04-18
- ভিজিটঃ 1844
আগামী দিনের নবজাতকের জন্য আমরা রেখে যেতে চাই
একটি অপার সম্ভাবনাময় সবুজ পৃথিবী।যেখানে মাটিতে সোনা ফলবে, প্রাণভরে নিশ্বাস নেওয়া
যাবে মুক্ত বাতাসে।একই সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই হারানো ঐতিহ্যের সাথে। কিন্ত আমাদের
পরিবেশ আজ হুমকির মুখে, মাটি হারাতে বসেছে তার উর্বরতা।মাটিসহ পরিবেশের অন্যান্য উপাদান
মারাত্বক দুষণের কবলে।
পরিবেশবান্ধব সোনালী আঁশ পাট ছিল একসময় বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল,যা দেশকে এনে দিত
প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা।সেই পাটশিল্পের গৌরব আজ অস্তায়মান প্রায়।তবে আশার কথা হচ্ছে
পাটের গৌরব পুনরুদ্ধারে পাটের ব্যবহারের বহুমুখীকরন ও পণ্যের সরবরাহ ও বিতরণে কৃত্রিম
মোড়ক ব্যবহারজনিত কারণে সৃষ্ট পরিবেশ দূষণ রোধকল্পে সরকার বদ্ধপরিকর।
উত্তরাঞ্চলের জেলা সমুহের মধ্যে গাইবান্ধা জেলাটি ক্রমশ সম্ভাবনাময় জেলা হিসেবে
আত্মপ্রকাশ করছে।শিল্পে, কৃষিতে , ব্যবসা-বানিজ্যে,সাহিত্য-সংস্কৃতিতে সমগ্র দেশে সাফল্যমন্ডিত
পদচারণা রয়েছে এ জেলার।গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সরকারের নির্ধারিত পণ্যসমুহে
(ধান, চাল, ভুট্টা, গম, সার ও চিনি) পাটজাত মোড়ক ব্যবহার করা হচ্ছে না এমন অভিযোগ ছিল।জেলা
প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফাতেমা-তুজ-জোহরা ১৭ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে
গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ি উপজেলার ঢোলভাঙ্গা বাজারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন।এসময়
জেলার মুখ্য পাট পরিদর্শক উপস্থিত ছিলেন।একটি পাইকারি চালের দোকানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ
কৃত্রিম মোড়ক থাকায় পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০ এর ধারা ১৪
অনুযায়ী মো. আরিফ মিয়া বয়স-২৮,পিতা- মো. মোজাম্মেল হক কে দশ হাজার টাকা জরিমানা করা
হয় এবং স্বল্পতম সময়ের মধ্যে কৃত্রিম মোড়কের পরিবর্তে পাটজাত মোড়ক ব্যবহারের জন্য উদ্বুদ্ধ
করা হয়।পাশাপাশি যেসব দোকানে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার করা হচ্ছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে
আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।
এ অভিযানের ধারাবাহিকতায় জেলার সকল উপজেলাতেই নিয়মিতভাবে বিষয়টি মনিটরিং ও
প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিযান চালানো হয়।ব্যবসায়ীদের একটি অংশ প্রাথমিকভাবে কিছুটা আপত্তি
তুললেও মেনে নিয়েছেন পরিবেশ দূষণ রোধে এবং দেশের সার্বিক কল্যাণে।
এখন গাইবান্ধা জেলায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরকারের নির্ধারিত পণ্যসমুহে পাটজাত
মোড়ক ব্যবহার করা হচ্ছে ।ব্যাবসায়ীমহল এখন সচেতন, আরও সচেতন সাধারণ জনগন। কৃত্রিম মোড়কের ব্যবহার কমাতে কমে গেছে পরিবেশ দূষণের
মাত্রা, জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে ধীরে ধীরে যার প্রকৃত সুফল হয়ত পরবর্তী প্রজন্মের
অপেক্ষায়। একই সাথে বর্ধিত পাটের চাহিদা বাড়িয়ে দিচ্ছে উৎপাদন।
সমগ্র দেশেই যদি সংশ্লিষ্ট আইনের প্রয়োগ কঠোর ও সুষ্ঠুভাবে হয় তাহলে পরিবেশ দুষণ অনেকাংশে
কমে আসবে।সোনালী আঁশের হারানো সুদিন আমরা আবারও ফিরে পাব, কৃষকের মুখে ফুটবে অনাবিল
হাসি।
