পাহাড়ের বৈচিত্র্যময় পরিবেশ রক্ষা

Client Logo
  • গল্প লিখেছেনঃ  খোন্দকার মোঃ ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাত
  • তারিখঃ 2017-04-17
  • ভিজিটঃ 1649
 
উঁচু-নিচু পাহাড়ি টিলা আর কাপ্তাই লেক এর নীল জলরাশি মিলে অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা। দেশের একটা বিশাল অংশের বনভূমি রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম এর পাহাড় জুড়ে। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে এসব পাহাড়-টিলার রয়েছে অসীম অবদান। পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম এর সংযোগস্থলে বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে অনেকগুলু ইটভাটা। মূলত এই অঞ্চলের পাহাড়ের মাটি কেটে ইট তৈরীর কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহারের লক্ষ্য নিয়েই এই ইটভাটাসমূহ তৈরি। ফলে একশ্রেণীর অসাধু লোক, ভূমিদস্যু ও লোভী ব্যক্তি বিভিন্ন উপায়ে নির্বিচারে পাহাড় ও টিলা কেটে সমতল ভূমিতে পরিণত করছে। নির্বিচারে পাহাড় ও টিলা কাটার ফলে দ্রুত প্রাকৃতিক বির্পযয় ঘটছে। ফলে পাহাড় ধসে মৃত্যুর ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। ভারসাম্য হারিয়ে মানুষের জীবন যাত্রা বিপন্ন হয়ে পড়েছে। বিলীন হচ্ছে জীববৈচিত্র এবং পরিবর্তন হচ্ছে ভূমির মানচিত্র। এছাড়া পাহাড় ও টিলা কেটে পাদদেশে নির্মাণ করা হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ বাড়ি-ঘর। ফলে বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধসে ঘটছে প্রাণহানির ঘটনা। এমতাবস্থায়, পরিবেশ রক্ষার গুরু দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় চলছে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বিশেষ অভিযান। বিগত ১০ অক্টোবর ২০১৬ তারিখ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নে ইট প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে পাহাড় হতে মাটি কেটে ইটের কাঁচামাল হিসাবে তা ব্যবহারে সহযোগিতা করার অপরাধে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ এর ৫ ধারা অনুযায়ী পাহাড় টিলা কাটার অপরাধে উক্ত আইনের ১৫ ধারার ১ উপধারায় মোঃ নাছের(৪৬), পিতাঃ আব্দুর রব, থানাঃ পাঁচলাইশ, জেলাঃ চট্টগ্রাম নামক  একব্যক্তিকে  তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে । বেতবুনিয়া থানার পুলিশ বাহিনীর সহযোগিতায় এ অভিযান পরিচালনা রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জনাব খোন্দকার মোঃ ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাত। পাহাড় কাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জানান। তিনি পাহাড় বা টিলা কাটার বিরুদ্ধে পুলিশ ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সজাগ দৃষ্টি রাখার নির্দেশ দেন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার, সচেতন নাগরিক ও সংবাদিকদের এ ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার অনুরোধ করেন। পরিবেশ রক্ষায় এই ধরণের আভিযানের পাশাপাশি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার মতো বাংলাদেশের সকল জায়গাতেই পাহাড় কাটা, সর্বোপরি পরিবেশ রক্ষায় সবাই সচেষ্ট হবেন, এই আমাদের প্রত্যাশা। এর মাধ্যমেই আমরা সবুজ বাংলাদেশ ভবিষ্যত প্রজন্মকে উপহার দিতে পারবো।

 প্রিন্ট